দাঁতরাঙা

দাঁতরাঙাদাঁতরাঙা (Indian Rhododendron – ?) এক ধরনের গুল্মজাতীয় গাছ; এর অন্যান্য আরো কিছু নাম রয়েছে: ফুটকি, লুটকি, ফুটুল, বনতেজপাতা ইত্যাদি। এটি বাংলাদেশে আগাছা / অপ্রয়োজনীয় গাছ হিসেবেই বেশি পরিচিত; যদিও বর্তমানে এর কিছু ঔষধি গুণাগুণ প্রকাশিত হয়েছে। এটি প্রধাণত পাহাড়ি বা উচুঁ এলাকায় বেশি জন্মে থাকে; বাংলাদেশ ছাড়াও এটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার দেখা যায়।

এই গাছে ছোট আকৃতির ফল জন্মে যা খেলে দাঁতের বর্ণ লাল হয়ে যায়, এবং এই কারণেই এই গাছটির নাম ‘দাঁতরাঙা’ হয়েছে। আবার, এর পাতা দেখতে তেজপাতার ন্যায় হওয়ায় একে অনেকে ‘বনতেজপাতা’ বলে থাকে। এই গাছটির উচ্চতা ১ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকলেও কখনো কখনো ৩ মিটার উচ্চতার গাছও চোখে পড়ে। তেজপাতার ন্যায় দেখতে এর পাতার দৈর্ঘ্য ৪ হতে ১১ সেন্টিমিটার; প্রস্থে ১.৩ সেন্টিমিটার যাতে ৫ হতে ৭ টি শিরা থাকে। এদের ফুল উজ্জ্বল বেগুনি বর্ণের এবং ফল সবুজ।

বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই এ গাছ দেখা যায়। তবে গাজীপুরের জয়দেবপুর, শ্রীপুর ও কাশিমপুরে প্রচুর এই গাছ পাওয়া যায়। টেকনাফ ও বান্দরবানে এর বেশ কয়েকটি জাত দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বনজঙ্গলে এই গাছ প্রচুর হয়।

এ গাছের পাতায় রয়েছে আলফা-এমাইরিন, বেটুলিনিক এসিড এবং কোয়ের্সেটিন ও কোয়েসিট্রিন-জাতীয় ফ্যাভনয়েড। আর এর ফুলে রয়েছে নারিঞ্জেনিন, কেইম্পফেরল, কেইম্পফেরল ৩-৪ গ্লুকোসাইড এবং কেইম্পফেরল ৩-৪ ডি-গ্লুকোসাইড প্রভৃতি। এ ছাড়াও এ গাছের পাতায় স্যাপোনিন, ট্রাইতারপিন ও স্টেরয়েড পাওয়া যায়।

লোক চিকিৎসায় এটি ব্যবহার হতে দেখা যায়। এটি কৌষ্ঠ্যকাঠিন্য রোগে ব্যবহৃত হয়। দাঁতরাঙার পাতার নির্যাস মানবদেহের ক্যান্সার, হৃদরোগ রোধে সহায়ক। তাছাড়া এর পাতার রস আমাশয়, পেটব্যথা, বাত ও বাতজ্বর দূর করতে পারে। আলসার, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁত ব্যথা, চর্মরোগ ও ডায়রিয়া চিকিৎসায় দাঁতরাঙা ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।

homeopathybd
ঔষধি গাছ সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন ।

Leave a comment

online partners namaj.info bd news update 24 _Add
.