গর্ভবতী মা কখন ও কতবার যাবেন চিকিত্সকের কাছে ?
গর্ভাবস্থায় একজন নারী মা হবার আনন্দে যেমন বিভোর থাকেন, ঠিক তেমনি আবার নানান বিপদের কথা ভেবে থাকেন শঙ্কিত। গর্ভধারণ মানেই কমবেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। তাই নিরাপদে মা হবার জন্য গর্ভে সন্তানের আগমন নিশ্চিত হওয়া মাত্র গর্ভকালীন পরিচর্যা শুরু করতে হবে। গর্ভকালীন পুরো সময় থেকে প্রসবের পর কিছুদিন পর্যন্ত নিয়মিত চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন ও কতবার
১) প্রথমবার ডাক্তার দেখাতে হবে গর্ভে সন্তানের আগমন নিশ্চিত হবার পর বা মাসিক বন্ধ হবার ২ মাসের মধ্যে। এরপর থেকে ৭ মাস (২৮ সপ্তাহ) পর্যন্ত প্রতিমাসে ১ বার।
২) ৭-৯ মাস (৩৬ সপ্তাহ) পর্যন্ত প্রতিমাসে ২ বার।
৩) ৯ মাস থেকে বাচ্চা প্রসব না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত একবার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
৪) যদি নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সুবিধা না থাকে তাহলে ন্যূনতম ৪ বার ডাক্তার দেখাতে হবে। প্রথম ৩ মাসে প্রথমবার, পরের ৩ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার এবং শেষ ৩ মাসে তৃতীয় ও চতুর্থবার ডাক্তার দেখাতে হবে।
গর্ভকালীন পরিচর্যার মাধ্যমে গর্ভধারণ, প্রসব ও পরবর্তী অনেক বিপদ এড়ানো সম্ভব এবং মায়ের সুস্থতা, নিরাপদ প্রসব ও স্বাস্থ্যবান সন্তান লাভ নিশ্চিত করা যেতে পারে। বিস্তারিত আলাপ ও শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিত্সক গর্ভাবস্থার ঝুঁকি নির্ধারণ করেন। গর্ভবতী মায়ের উচ্চতা, ওজন, রক্তশূন্যতা ও রক্তচাপ রেকর্ড করা হয় এবং কিছু প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। যেমন রক্তে হিমোগ্লোবিন, গ্রুপিং ও Rh টাইপিং, রক্তের সুগার, VDRL এবং ইউরিন R/E টাইপিং ও মাইক্রোস্কোপিক টেস্ট। গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ পর্যন্ত ডাক্তারের কাছে ভিজিটগুলোতে নতুন কোনো উপসর্গ, জরায়ুর উচ্চতা মেপে শিশুর বৃদ্ধি অনুমান করা, শিশুর অবস্থান ও হৃদস্পন্দন পরিমাপ করা এবং বেশ কয়েকবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় টিকা
গর্ভাবস্থায় কেবলমাত্র একটি টিকা নিতে পারেন আর তা হলো টিটি বা টিটেনাস ট্রাইফয়েড। যদি টিটি টিকার পাঁচটি ডোজ না নেয়া থাকে, তাহলে গর্ভধারণে প্রথম ও ষষ্ঠ মাসে টিটি টিকার দুটি টিকা নিতে হবে। আর যদি আগেই দুই ডোজ নেয়া থাকে তাহলে পরবর্তীতে গর্ভাবস্থায় মাত্র একটি বুস্টার ডোজ নিতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন